প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ১২, ২০২৪, ৫:৪৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ২:১৪ পি.এম
জুড়ী সীমান্তে বিএসএফর গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে পাশে জেলা জামায়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক: মোঃ জালাল উদ্দিন।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা শাখার জামায়াত। সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং, সকালে নিহত স্বর্ণা দাসের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাছে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শাহ, জুড়ী উপজেলা আমির হাফেজ নাজমুল ইসলাম, উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল হাই হেলাল, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি লুৎফর রহমান আজাদী। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসাইন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি সাজিদ মাহমুদ, আহমদ আলী, শহিদুল হক কুনু, ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ ও আব্দুল হেকিম বাবুল। ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ বলেন, স্বর্ণা মামার বাড়ি যাওয়ার পথে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। সে স্থানীয় নিরোধ বিহারি স্কুলে পড়ালেখা করত। মারা যাবার এক দিন পর আমাকে বলা হয় গাড়ি নিয়ে গিয়ে সীমান্ত থেকে লাশ আনার জন্য। তারপর লাশ নিয়ে এসে দাহ করি। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই। তারা (বিএসএফ) চাইলে গুলি না করে জেলে নিতে পারত। তারা সরাসরি গুলি করে একটা মেয়েকে মেরে ফেলল। এটা কতটা যুক্তিযুক্ত? জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, জুড়ীবাসী নয় পুরো বাংলাদেশ স্বর্ণা দাশের ঘটনায় মর্মাহত। আমরা সকল ধর্মের মানুষ একই সঙ্গে বসবাস করি। আমাদের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন ভারতে রয়েছেন। তাদের অনেককে দেখতে ভারতে যাওয়া-আসা হয়। কেউ যদি অবৈধ অনুপ্রবেশ করে রাষ্ট্রীয় আইন আছে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারে। একজনকে গুলি করে মেরে ফেলবে এটা কোন ধরনের কথা? তিনি বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। এটির জন্য আন্তর্জাতিক আইনে বিচার দাবি করছি এবং ভবিষতে যাতে এই রকমের কোনো ঘটনা না ঘটে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী বলেন, আমরা স্বর্ণা দাসের ঘটনার খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নেই। আমি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এটার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি। তিনি বলেন, সীমান্তের ফেলানী থেকে স্বর্ণা হত্যাকাণ্ড এই ধরণের কোনো হত্যাকাণ্ড চাই না। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মানুষ মানুষকে এভাবে হত্যা করতে পারে না। স্বর্ণা একজন মেয়ে মানুষ, সে চোরাকারবারি নয়, অসৎ নয়, সন্ত্রাসী নয়। কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হবে? সে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যেতে চেয়েছিল। এটা তার অপরাধ? এম শাহেদ আলী আরও বলেন, আমাদের যদি কোনো প্রদক্ষেপ থাকতো তাহলে সীমান্তে এরকম ঘটনা ঘটতো না। আমাদের কার্যকরি কোনো উদ্যোগ নেই। আবার পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র পাখির মতো গুলি করে হত্যা করবে এই অধিকার তারা পেল কোথায়? একটা বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সবাই দাবি রাখে। বন্ধুত্বপূর্ণ নিদর্শন এটা নয় যে বুলেট দিয়ে মানুষ হত্যা করা হবে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত দিয়ে মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে যাবার পথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা যায় স্বর্ণা দাস। গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে সীমান্ত এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে।