ওমর ফারুক।
বাবার ঋণ আমি শোধ করবো “
ছোট বোন আমার হাত চেপে ধরে বললো “ভাইয়া,তুই শোধ করবি কিভাবে? তুই নিজেই তো ৫ বছর ধরে কোনো চাকরি পাচ্ছিস না।বেকারত্বের শিকার হয়ে টাকা শোধ করবি কিভাবে?”
বোনকে অভয় দিয়ে বললাম “শত কষ্ট হলেও শোধ করবো বোন!”
সারারাত আমার ঘুম হলো না। বোনের বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। পরিবারের খরচ নাহয় কোনোরকম চালাবো, কিন্তু বোনের বিয়ে কিভাবে দিবো?
পরেরদিনই ঋণদাতারা এসে বাড়িতে হাজির। বাইরে বেড় হয়ে এতো লোককে দেখে ঘামে আমার কপাল ভিজে উঠলো।মৃদু স্বরে বললাম
“আপনারা বাবার কাছে কত টাকা পান বলুন। আমি চেষ্টা করবো শোধ করার!”
ওদের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে এসে বললো “আমরা ব্যাংক থেকে এসছি। উনি তার ছেলে মেয়ের নামে ৭ লাখ টাকা সঞ্চয় করে রেখে গেছেন।কাইন্ডলি ব্যাংকে যোগাযোগ করুন।”
একথা বলে তিনি চলে গেলেন। বাকি লোকগুলিও ছোট ছোট সমিতি থেকে এসছেন। ওরা জানালেন বাবা ওদের সমিতিতে প্রতিদিন ২০ টাকা করে সঞ্চয় রাখতেন।
রাতে সব মিলিয়ে হিসেব করে দেখলাম বাবা আমাদের জন্য মোট ১১ লাখ টাকা সঞ্চয় করে রেখে গেছেন।
মনে পড়ে গেলো সেদিন রাতের কথা।
যে রাতে আমি বাবাকে বলেছিলাম,
“আপনি কেমন বাবা? আমার ভবিষ্যতের নিয়ে আপনার কোনো চিন্তা আছে?দরকার নেই আমার এমন বাবার “
বাবা তখন মৃদু হেসে বলেছিলেন “আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করছি। সময় হলেই পেয়ে যাবে”
হ্যাঁ সে সময়টা এখন এসে গেছে। কিন্তু বাবা চলে গেছে দূরে, ওই তারাদের কাছে। আমি আকাশের দিকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,
“বাবা, আজ পর্যন্ত তোমায় কখনো বুঝতে পারলাম না। এখন বুঝতে পারছি, কেন তুমি এক শার্ট পড়েই একটা বছর কাটিয়ে দিতে”
FB সংগৃহীত।